বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা: মার্চ থেকে ডিসেম্বর, ১৯৭১

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা: মার্চ থেকে ডিসেম্বর, ১৯৭১

মোহাম্মদ ইকবাল
আজ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা লিখতে বসেছি ৪৭ বৎসর পর যা আজো বিশেষভাবে বলার বা লেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু স্মৃতির মণিকোঠায় চিরভাস্বর হয়ে থাকা মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি আজো এতটুকু ম্লান হয়নি। কারণ ৭১’এর ঘটনাপ্রবাহ এতই বিশাল ও সমৃদ্ধ যে, মনে হয় এইতো সেদিনের কথা। চোখের সামনে আয়নার মত পরিস্কার ভেসে ওঠে মুক্তিযুদ্ধের সকল স্মৃতি, এতটুকুও ভূল পড়ে না। অন্য অনেক স্মৃতি বা ঘটনা মন থেকে ম্লান হয়ে গেছে, স্মৃতি থেকে মুছে গেছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কথা, স্বাধীনতার কথা, আন্দোলন, সংগ্রাম, রাজপথ কাঁপানো স্লোগান-মিছিল সবই ছবির মতো মনের পর্দায় ভেসে ওঠে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ১৭ বৎসর। তখন তারুন্যের চঞ্চল উদ্যম আর মুক্তির নেশায় সারা বাঙালি জাতি যখন এক, তখন আর ঘরে বসে থাকতে পারি নি। আমার রাজনীতির হাতেখড়ি যখন ঢাকার কালিগঞ্জের রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ হাইস্কুলের ছাত্র ছিলাম তখন আমার সৌভাগ্য হয়েছিল আজকের বয়োজ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ শ্রদ্ধেয় তোফায়েল আহমদ, আ স ম আব্দুর রব, খালেদ মো. আলী ও মাহবুবুল হক এর মত ছাত্রনেতাদের পরম সান্নিধ্যে আসার। তাঁদের দিকনির্দেশনায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ি।
১৯৭০ সালে সিলেট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করার পর সিলেট মদনমোহন কলেজের বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হই আমি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সঙ্গে আমার মরহুম পিতা-মাতার নির্দেশে সিলেট থেকে স্থানান্তরিত করে বাড়ীর কাছে মৌলভীবাজার কলেজে ভর্তি হই। মৌলভীবাজার কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের প্রমোদ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি।
২৫শে মার্চ ১৯৭১, পাক হানাদার বাহিনী যখন নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করল, তার রেশও সিলেট জেলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ল। সিলেটের শেরপুরের কাছে যখন পাক হানাদার বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখামুখি যুদ্ধ শুরু হলো। সেই যুদ্ধে শত্রুবাহিনী ও অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও আহত হন। যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীতে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কিছু সৈন্যের সঙ্গে সাধারণ মুক্তিকামী মানুষ শরীক হয়ে মুক্তিবাহিনী গঠিত হয়। তখন সম্মুখ যুদ্ধের দায়িত্বে ছিলেন জেনারেল সি. আর. দত্ত, আজিজ সাহেব ও হবিগঞ্জ গণপরিষদ সদস্য কমান্ডার মানিক চৌধুরী। তাঁদের অনুপ্রেরণায় আমিও ঘরে বসে থাকতে পারিনি। মুক্তিবাহিনীতে শরীক হই। আমার সহযোদ্ধা আব্দুল মুকিত টুটু (বর্তমানে সুইডেন প্রবাসী) আমাদের মধ্যে প্রথম যুদ্ধে আহত হন। আর আমরা প্রাণে বেঁচে যাই। আমাদের হাতে তখন ছিল ৩০৩ রাইফেল, কিছু লাইট মেশিনগান, আর অপরদিকে সুসজ্জিত পাক হানাদার বাহিনী। এদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে টিকে থাকা খুবই অসম্ভব। আর এক সময় যখন শেরপুরের পতন হয় শত্রু বাহিনীর হাতে, খুব সম্ভবত ৭১’এর এপ্রিল মাস, তখন আমাদেরকে উচ্চতর সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য রাতের অন্ধকারে অজানা গন্তব্য স্থানের দিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পুরো এক রাত্রি দুর্গম পাহাড়ী পথ অতিক্রম করে পরের দিন ভোরবেলা যখন ট্রাক থামল গন্থব্য স্থানে, তখন দেখি আমরা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কোন গহীন জঙ্গলের ভিতরে। আমরা ভারতীয় বর্ডার ফোর্স দ্বারা সমষ্টিত হই। পরের দিন থেকে শুরু হলো আমাদের সামরিক প্রশিক্ষণ। কিভাবে শত্রুর মোকাবেলা করতে হয় এবং সব ধরণের সামরিক অস্ত্র চালানো পাকা করতে হাতে দেওয়া হলো গ্রেনেড, লাইট মেশিনগান ও স্টেনগান।
সপ্তাহ দশদিনের সামরিক প্রশিক্ষণের পর আমরা ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করি। সিলেটের কুলাউড়া অঞ্চলে বিভিন্ন অপারেশনে যোগ দেই। বেশিরভাগ সময় শত্রুর মোকাবেলা করতে হয় গভীর রাত্রিতে। খুব সম্ভবতঃ জুন/জুলাই মাসে মুক্তিযুদ্ধ যখন পুরোপুরি তুঙ্গে তখন আমাদের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে মৌলভীবাজার অঞ্চলের সংগঠক মাহমুদ সাহেব/মুজিব সাহেব/নাছির সাহেব/বেগ সাহেবের নির্দেশে আমাদের উচ্চতর সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হলো। আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হলো-শুধু চোখে দেখবে, কানে শুনবে এবং মুখ বন্ধ থাকবে। তাই হলো। আমাদেরকে ত্রিপুরা রাজ্যে আশারামবাড়ী থেকে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ট্রাকে করে দুর্গম পাহাড়ী এলাকা দিয়ে আগরতলা বিমান ঘাটিতে নেওয়া হলো। আমাদের গন্তব্যস্থান সম্পর্কে কিছু অবগত করা হয়নি বা বলার মত সাহসও ছিল না। পরিবেশ ছিল খুব থমথমে কারণ বাংলাদেশে প্রচন্ড যুদ্ধ চলছে তখন। সেখানে দেখা হলো অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে। যাহাদের কথা মনে পড়ে তারা হলেন-কলাবাগানের রাজ ভাই, আমার গ্রামের ছেলে তরুন সেন (বর্তমানে নিউইয়র্ক প্রবাসী), শ্রীমঙ্গল থেকে আমি মোহাম্মদ ইকবাল, রাজনগর থেকে রানা ভাই (বর্তমানে নিউইয়র্ক প্রবাসী), ময়নু বখত্ (বর্তমানে কানাডা প্রবাসী), মরহুম আছকান, মৌলভীবাজার শহরের দিলিপবাবু (বর্তমানে নিউইয়র্ক প্রবাসী) প্রমুখ।
দুইদিন বিরতির পর আগরতলা থেকে আমাদের ভারতীয় বিমান বাহিনীর সি/৩০ হারকিউলিস সামরিক বিমানে আমাদের উঠানো হলো। আমাদের সঙ্গে অনেক সামরিক অফিসারও বিমানে উঠলেন। এটাই আমার জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমণ। আমি খুবই শংকিত হয়ে যাচ্ছিলাম। কোথায় যাচ্ছি? কি হবে আমাদের? দেশে ফেলে এসেছি প্রিয়জনদের? তারা কিভাবে আছে? কোন খবর নেই কারো। মনে অনেক প্রশ্ন কিন্তু কোন উত্তর নেই!!! কাউকে প্রশ্ন করার মতো মন- মানসিকতা নেই, সাহসও নেই। সবাই এতিমদের মতো চেয়ে আছি একে অপরের দিকে। আমাদের পরনের কাপড়ের অবস্থা একই। দেশ থেকে এসেছি এক কাপড়ে। দ্বিতীয় প্রস্থ নেই। দাড়ি কাটা হয়নি অনেকদিন, গোসলও হয়নি অনেকদিন। সুদীর্ঘ ৪/৫ ঘন্টা বিমান ভ্রমণের পর সন্ধ্যার দিকে আমাদের নামানো হলো রাজস্থান সারানপুর বিমান ঘাটিতে। সেখানে তাবুতে যাত্রা বিরতির পরদিন ভোরবেলা ৪টি ট্রাকে করে পাহাড়ের পাশ দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে অনেক উচ্চতায় উঠতে শুরু করল। সে দৃশ্য কি অপূর্ব ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এরকম নয়নাভিরাম দৃশ্য আমি জীবনেও দেখিনি। কি সৌভাগ্য! আমাদের দেরাদুন মিলিটারী একাডেমির “টান্ডুয়া” সেনাছাউনিতে নেওয়া হলো। এই উবৎধফঁহ গরষরঃধৎু অপধফবসু দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় তৈরী হয়। শুনেছি সেখান থেকে আমাদের সমর নায়ক মরহুম জেনারেল ওসমানী সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। আমাদের জানানো হলো, আমাদের বাহিনীর নাম “মুজিব বাহিনী” আর আমি দ্বিতীয় ব্যাচের ট্রেনিং এ অংশগ্রহণ করি। আমাদের রুটিন মতো ট্রেনিং শুরু হলো। দিনের শুরুতে সামরিক কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হলো। সেখানে দেখা হলো-খসরু ভাই, মন্টু ভাই, হাসানুল হক ইনু এম.পি (বর্তমানে জাসদ সভাপতি), শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও মাহবুব ভাই (সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
ছয় সপ্তাহ পর আমাদের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হলো। বিদায়ের প্রাক্কালে বিদায়ী অভ্যর্থনা দেওয়া হয় আমাদেরকে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সামরিক বাহিনীর জেনারেল ওবান, লে. জে. মালহোত্রা, ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খান (দাদাভাই), মরহুম শেখ ফজলুল হক (মনি ভাই), রাজ্জাক ভাই ও তোফায়েল ভাই। তাঁরা আমাদেরকে নাতিদীর্ঘ বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় মুক্তিযুদ্ধের চলমান পটভূমিকা, বর্তমান ও ভবিষ্যত রূপরেখা ও আমাদের করণীয় কি সে ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিলেন। আমাদের বলা হলো-মুক্তিযুদ্ধ কবে শেষ হবে আমরা কেউ তা জানি না। যুদ্ধ হয়তো দীর্ঘদিন চলতে পারে। দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে যুদ্ধ করতে হবে, আর আমরা সেই অঙ্গীকারে আবদ্ধ হই। জুলাই মাসের শেষের দিকে আমরা ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত শহর ধর্মনগরে আসি। সেখানে অবস্থান করেই বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, বড়লেখা ও সমশেরনগরে আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে হলো। আমরা সাধারণত গেরিলা যুদ্ধে পারদর্শী হয়ে উঠেছিলাম এবং সেই ভাবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকাতে আমাদের আক্রমণের জন্য পাঠানো হতো। আমাদের দুর্ভাগ্য আগস্ট মাসের শেষের দিকে অপারেশনে আমরা ২০/২৫ জনের দল নিয়া যখন মৌলভীবাজার জেলার দিনারপুর পাহাড়ের দিকে রওয়ানা দেই তখন ভোর হয়ে যাওয়াতে পথিমধ্যে আমরা সাতগাঁও পাহাড়ে রাত্রে যাত্রা বিরতি করি। আমাদের গাইড ছিলেন ভূনবীর স্কুলের সাবেক শিক্ষক আছকির মিয়া (সাবেক শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান)। সেইদিন দিনারপুর থেকে আগত সহ মুক্তিযোদ্ধা সমীর সোম, মুকিত লস্কর, রানু, সাব্বিররা পথের ভূলের জন্য রাজাকারদের হাতে ধরা পড়লেন। পরে তাদেরকে শ্রীমঙ্গল ওয়াপদা ভবনে অবস্থিত পাক হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেখানে একে একে নির্যাতনের মাধ্যমে তারা প্রত্যেকেই শাহাদাৎ বরণ করেন। শুধু ভাগ্যগুনে সাব্বির ভাই বেঁচে যান, মুক্তি পান পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে। তিনদিন সাতগাঁও পাহাড়ে অবস্থানের পর আমাদের গাইডের সুপরামর্শে বাধ্য হয়ে আমাদেরকে রাতের অন্ধকারে আবার সীমান্তবর্তী ক্যাম্পে ফিরে যেতে হয়। কারণ, লোকমুখে জানাজানি হয়ে গেছে, পাহাড়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আশ্রয় নিয়ে লুকিয়ে আছে। ছোট একটা গোয়াল ঘরে আমরা ২০/২৫ জন গাদাগাদি করে লুকিয়ে ছিলাম। মাথার উপরে পাক বাহিনীর হেলিকপ্টার ঘুরাঘুরি করছিল আমাদের খোঁজার জন্য। কি দুঃসহ সেই তিনদিন। না নড়তে পারি, না কাশতে পারি শুধু মনে মনে ধরে নিয়েছিলাম এই বুঝি আমরা শত্রুর হাতে ধরা পড়ি। সেখান থেকে বের হবার কোন পথ নেই। শেষ পর্যন্ত আমরা তিনদিন পরে আমাদের ক্যাম্পে ফিরে আসতে পারি নিরাপদে। সমস্ত শরীর জোঁকের কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গিয়েছে। জঙ্গলের মধ্যে জোঁক থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই, কোন কোন স্থানে সাপের সঙ্গে সহ অবস্থান করতে হয়েছে। তবে ভাগ্য ভালো কাউকে সাপে কাটেনি। তারপর সামান্য বিরতি নিয়ে আবার আমাদের অপারেশনে ফিরে যেতে হয়। ৩রা ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখটি খুব বেশি করে মনে পড়ে। আমি তখন কুলাউড়ার ফুলতলা ভারতীয় সেনা ক্যাম্পে। ওদের রেডিও মারফত জানতে পারলাম ভারত আমাদেরকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছে। আর ভারতীয় সামরিক বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুখামুখি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে শুরু করে। কুলাউড়ার সাগরনাল চা বাগানের কাছে যুদ্ধে উভয় পক্ষে অনেক সৈন্য হতাহত হয়, আমি ভাগ্যগুনে বেঁচে যাই। সেখানে আমার পরিচয় হয় রবিউল আলম সাহেবের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংসদ সদস্য। তারপর ১৬ই ডিসেম্বর পাক বাহিনীর আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের পরিসমাপ্তি হয়। আমি কুলাউড়ায় এসে সেখানে শরীক হই ব্যারিস্টার মোন্তাকিম চৌধুরীর সঙ্গে। তাঁর সাথে আমি সিলেট বিমান বন্দরে পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হই। তারপর মাহমুদ সাহেবের নির্দেশে আমার এলাকা শ্রীমঙ্গল থানার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য আমাকে উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আমি সেই দায়িত্ব সম্পূর্ণ জবাবদিহিতার মাধ্যমে পালন করি আমার সহমুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে।
উল্লেখ্য যে, আন্দোলনের সিঁড়ি বেয়ে আসে ১৯৭১ সাল। আর এই ৭১ আমাদের গর্ব-অহংকার। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্ণাঢ্য বিভায় বিভূষিত। ৭১ নানা ঝড়-ঝঞ্জায়, নানা উত্থান-পতনে, এনে দিয়েছে আমাদেরকে এক স্বতন্ত্র স্বত্তা। ৭১-এর স্মৃতি চির অমলিন। এই স্মৃতি এনে দেয় কখনও বেদনা, কখনও আনন্দ। ৭১ এর স্মৃতি মন্থন করে আমরা জানতে পারি অনেক দুঃসাধ্যের কথা, বীরত্বের কথা ও আত্মত্যাগের কথা। অগণিত মানুষের দূর্বার দেশপ্রেমই আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন মানচিত্র। আর মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা যেন আমাদের চিন্তা-চেতনায় দেশাত্মবোধকে লালন করি এবং একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ায় অঙ্গীকারবদ্ধ হই।
লেখক: নিউইয়র্ক প্রবাসি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com